আচার্য হিসেবে তাঁর ক্ষমতার প্রমাণ দিতে সোমবার বিনা নিমন্ত্রণেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজির হলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বৈঠকে যোগ দিতে রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছতেই তাঁর গাড়ি ঘিরে ওঠে গো–ব্যাক স্লোগান, দেখানো হয় কালো পতাকা। শেষ পর্যন্ত তাঁদের সাহায্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে প্রবেশ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার।
পড়ুয়ারাই মানববন্ধন করে তাঁকে যাদবপুরের ভেতরে নিয়ে যান। পড়ুয়াদের দাবি, কোর্ট বৈঠকে রাজ্যপালকে যোগ দিতে দেওয়া হবে। তবে তার আগে তাঁদের প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। পড়ুয়াদের কথা শুনে গাড়ির মধ্যে থেকে রাজ্যপাল জানান, তিনি পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলবেন। যদিও তৃণমূলের শিক্ষক–অশিক্ষক সংগঠনের সদস্যরা দাবি করতে থাকেন, কোনওভাবেই রাজ্যপালকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে প্রবেশ করতে দেবেন না। তাঁর গাড়ি ঘিরেই ফের বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। তখন মানববন্ধন করে রাজ্যপালকে গাড়ি থেকে নামতে সাহায্য করে পড়ুয়ারা এবং তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফ রুমে নিয়ে যান।
প্রায় ৫০ মিনিট আটকে থাকার পর ছাত্রদের শর্ত মেনে শেষ পর্যন্ত গাড়ি থেকে নেমে বৈঠকে যোগ দেন আচার্য তথা রাজ্যপাল। যদিও বৈঠক কক্ষের বাইরে তৃণমূল ছাত্র সংগঠনের তরফে জমা হয়ে একটানা স্লোগানিং চলতে থাকে।
বিশেষ সমাবর্তন বাতিলের ক্ষমতা কার হাতে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে চিঠি দিয়েছিলেন ধনকার। তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধির উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, বিশেষ সমাবর্তন বাতিলের যে সিদ্ধান্ত কর্মসমিতি নিয়েছে তা তাদের এক্তিয়ার–বহির্ভূত। একইসঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, এই অসম্মান সংশ্লিষ্টদের জন্য ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এই সমাবর্তনকে বেআইনি বলেও উল্লেখ করা হয়েছে রাজ্যপালের চিঠিতে। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, বেআইনি সমাবর্তনে শংসাপত্র নিয়ে বিপাকে পড়তে পারেন পড়ুয়ারাও।
পড়ুয়াদের দাবি, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে রাজ্যপালের অবস্থান পক্ষপাতদুষ্ট। দিল্লির শাসকের হয়ে কথা বলছেন তিনি। তাছাড়া বাবুল কাণ্ডে রাজ্যপালের ভূমিকাতেও ক্ষোভ ছিল পড়ুয়াদের মধ্যে। রাজ্যপাল বিরোধী বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়ো হন পড়ুয়ারা। সব শেষে রাজ্যপাল বলেন, ‘ছাত্রদের সব প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি চাই। আমি ছাত্রছাত্রীদের ভাল চাই বলেই এখানে এসেছি। সিএএ নিয়ে আমি নিজের অবস্থান জানাতে প্রস্তুত। তার আগে আপনারা সম্পূর্ণ ডেপুটেশন দিন।’