প্রয়াত বিশিষ্ট আইনজীবী তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রাম জেঠমালানি। রবিবার সকালে দিল্লির বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন জেঠমালানি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। বাজপেয়ী সরকারের প্রাক্তন আইন এবং নগরোন্নয়নমন্ত্রী দীর্ঘ কয়েক মাস ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন। তাঁর মৃত্যুর খবর জানান, তাঁর ছেলে মহেশ জেঠমালানি। বহু বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতানেত্রীর মামলা লড়েছিলেন রাম জেঠমালানি। তাঁদের মধ্যে লালকৃষ্ণ আদবানি, লালুপ্রসাদ যাদব, জয়রাম জয়ললিতা, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মতো নেতানেত্রীরা রয়েছেন।
দীর্ঘ সাত দশক ধরে আইনজীবী কেরিয়ারে ভূমিকা পালন করেছিলেন। সবচেয়ে বেশিদিন আইন পেশায় থাকার রেকর্ড তাঁর ঝুলিতে। ক্ষুরধার মস্তিষ্ক ছিল তাঁর। রাজীব গান্ধী হত্যা মামলা, জেসিকা লাল হত্যা মামলা, হর্ষদ মেহতা দুর্নীতি মামলা, আফজাল গুরু মামলার মতো বহু হেভিওয়েট মামলায় দক্ষ আইনজীবীর ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। ১৯২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর, তৎকালীন ভারত এবং বর্তমানে পাকিস্তানের সিন্ধ জেলার শিকারপুরে জন্ম রাম জেঠমালানির। বাবা বুলচন্দ গুরমুখদাস জেঠমালানি, মা পার্বতী জেঠমালানির মেধাবী পুত্র রাম জেঠমালানি ডবল প্রোমোশন পেয়ে মাত্র ১৩ বছর বয়সে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। বম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাত্র ১৭ বছর বয়সে আইনে স্নাতক হয়ে আদালতের বিশেষ অনুমতি পেয়ে মাত্র ১৮ বছরেই আইন চর্চা শুরু করেন। তারপর আইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পেয়ে ২১ বছরেই করাচিতে পুরোদমে প্র্যাকটিস করতে থাকেন দেশভাগ পর্যন্ত।
বরাবরই বিতর্কের কেন্দ্রে থেকেছেন তিনি। ১৯৫৯ সালে প্রথম তিনি আলোচনায় আসেন। কেএম নানাবতি বনাম স্টেট অব মহারাষ্ট্র মামলায় ওয়াইভি চন্দ্রচূড়ের সঙ্গে লড়েছিলেন। শিবসেনা এবং বিজেপি’র সমর্থনে প্রথমবার উল্লাসনগর থেকে নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়ালেও হেরে যান। জরুরি অবস্থার সময় বার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং ইন্দিরা গান্ধী সরকারের তীব্র সমালোচক ছিলেন। ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯ সালে অটল জমানায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য থাকলেও ২০০০ সালে মন্ত্রীত্ব থেকে ইস্তফা দেন জেঠমালানি। মোট ৬ বার রাজ্যসভার সদস্য হন। বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১২ সালে বিজেপি’র তৎকালীন সর্বভারতীয় সভাপতি নীতীন গডকরীকে দলীয় নেতাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে চিঠি লিখেছিলেন। ২০১৩ সালে বিজেপি তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে।