প্রায় সাড়ে সাত মাস পর ফের লোকাল ট্রেন চালু হল রাজ্যে। বুধবার ভোরেই সাধারণ যাত্রীদের জন্য গড়াতে শুরু করে লোকাল ট্রেনের চাকা। ভোর ৩টে ৫ মিনিটে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ক্যানিং এক নম্বর প্লাটফর্ম থেকে দীর্ঘ ৮ মাস পর লোকাল ট্রেনের চাকা গড়াল। সেই ট্রেনে ক্যানিং থেকে ১১৫ জন যাত্রী উঠল ট্রেনে।
কোভিড–বিধি মেনে নির্দিষ্ট সংখ্যক লোকাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা মতোই আপাতত ৬৯৬টি ট্রেন চালানো হচ্ছে। তার মধ্যে শিয়ালদহ ডিভিশনে ৪১৩টি, হাওড়া ডিভিশনে ২০২টি এবং খড়গপুর ডিভিশনে ৮১টি লোকাল ট্রেন চালানো হচ্ছে।
গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আমফানের দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ছিল সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা। এই সব প্রত্যন্ত গ্রামগুলি থেকে অসহায় মানুষজন ট্রেনে উঠতে পেরে খুবই খুশি। দীর্ঘ কয়েক মাস পর কাউন্টার থেকে বিক্রি শুরু হয় টিকিট। কাউন্টারের পাশে রাখা হয়েছে স্যানিটাইজার। যাত্রীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
শহরতলির বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু মহিলা কলকাতায় পরিচারিকার কাজ করতে যায়। করোনাভাইরাস অতি মহামারীতে এবং লকডাউনে তাদের কাজ হারিয়েছে। তাই এদিন দেখা গেল, কমেছে মহিলা যাত্রীর সংখ্যা। স্টেশনে ভিড় নিয়ন্ত্রণে রয়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ। বেশ কিছু স্টেশনে ঢোকা ও বেরনোর রাস্তা দড়ি ও বাঁশ দিয়ে ঘেরা হয়েছে। স্টেশনে চত্বরে মোতায়েন হয়েছে আরপিএফ এবং জিআরপি। জানানো হয়েছে, লোকাল ট্রেনে যাত্রা করতে হবে যাত্রীকে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।
লোকাল ট্রেন চলাচলে আশায় বুক বেঁধেছে সর্বস্তরের মানুষজন। তবে সকালে স্টেশন চত্বর অনেকটাই ফাঁকা থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন স্টেশনে টিকিটের জন্য লম্বা লাইন চোখে পড়ে। দিনের ব্যস্ত সময়েই ভিড়ে আসল চেহারা দেখা যাবে। ফলে এই ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য পর্যাপ্ত পুলিশের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। উপস্থিত স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মীরা ট্রেনে ওঠার আগে থার্মাল স্ক্যানিং করে চেক করছেন।
জানা গিয়েছে, এবার প্রত্যেকদিন ভোর ৫টা নাগাদ শুরু হবে ট্রেন চলাচল। রাত ১১টার আগে–পরে বন্ধ হয়ে যাবে পরিষেবা। মাস্ক না থাকলে রেল পুলিশ যাত্রীদের মাস্ক বিলি করছে। ট্রেনের কামরায় কোভিড বিধি মানা হচ্ছে কি না তা কড়া হাতে দেখছে রেল। সবাই খুশি সাত মাস পর ট্রেনে করে অফিস যেতে পেরে। স্টেশনের বাইরে থার্মল স্কিনিং, মাস্ক নিয়ে কড়াকরি, মাইক প্রচার। জিআরপির তৎপরতা রয়েছে।